বরিশাল

নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবৈধ নির্মাণ!

  প্রতিনিধি ৭ ডিসেম্বর ২০২৫ , ১:০০:০১ প্রিন্ট সংস্করণ


*১৯ নং ওয়ার্ডে নতুন করে অনুমোদনহীন নির্মাণ    *ভবন মালিক অনুমতির বিষয়ে দায় এড়ান    *বিসিসির আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি


তালাশ প্রতিবেদক:
সাম্প্রতিক সময়ে বরিশালে বারবার অনুভূত ভূমিকম্পে নগরবাসীর মধ্যে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। নগর উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে।

 

প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, সিটি করপোরেশন এলাকায় বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) না মেনে নির্মিত হয়েছে ৩৫ হাজারেরও বেশি ভবন। এদের অধিকাংশ ভবনেই নেই মাটি পরীক্ষা, অনুমোদিত নকশা, নিরাপদ দূরত্ব ও স্থাপত্যগত নিরাপত্তা। ফলে সামান্য ভূকম্পনেও এসব ভবন ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

 

তদন্তে উঠে এসেছে, নগরীর প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মাণ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও খোলা জায়গার ঘাটতি নিয়মভঙ্গের সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

 

এরই ধারাবাহিকতায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডে নতুন করে নিয়ম অমান্য করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

এ বিষয়ে ভবন মালিক মাকসুদা বেগম বলেন, “আমিতো এখানে বিল্ডিং করতেছি না। জায়গাটা দখলে রাখার জন্য একটি গোডাউন তৈরি করছি। এতে সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি যদি লাগে আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করব। কিন্তু এখানে আপনাদের কাজ কি? আর সংবাদ করার কি আছে।”

 

ঘটনাস্থলে এসে ভবন মালিকের আত্মীয় মো: লাল নিজেকে “আর্মি পারসন” পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সিটি কর্পোরেশনের সাথে কথা হয়েছে, তারা আসবে না। আপনারা চুপ হয়ে গেলেই হয়। আর সংবাদ করলে সিটি কর্পোরেশন কি করবে তা আমি দেখে নেব।

 

 

বিসিসির স্থপতি শাখার প্রধান সাইদুর রহমান বলেন, সিটি কর্পোরেশন আওতায় কোনো ভবন নির্মাণ করতে হলে অবশ্যই পরিকল্পনার আওতায় আসতে হবে। যদি কোনো প্ল্যান বা অনুমতি না নিয়ে ভবন নির্মাণ হয় তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কাছথেকে নাম ঠিকানা নিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন।

 

স্বপন কুমার দাস বলেন, ওই এলাকার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তিনি সরেজমিনে গিয়ে রিপোর্ট দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

বিশেষজ্ঞরা বলেন- মাটি পরীক্ষা ছাড়া, অনুমোদিত নকশা ছাড়া, নিরাপত্তার মানদণ্ড না মেনে যে কোনো কাঠামো নির্মাণ করা বিএনবিসি লঙ্ঘন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। তারা বলছেন, বরিশাল মহানগরীর নিচে টিলা পলি ও নদী উৎপন্ন নরম মাটি থাকায় ভূমিকম্পে ভবন ধসে পড়ার সম্ভাবনা আরও বেশি।”

 

নগরবাসীর প্রশ্ন- অবৈধ ভবন নির্মাণ হয় তাহলে সিটি করপোরেশনের তদারকি কোথায়? ৩৫ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা কি প্রকাশ করা হবে? ভূমিকম্প সহনীয় নগর গড়তে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ কী?

আরও খবর

Sponsered content