প্রতিনিধি ১১ অক্টোবর ২০২৫ , ৯:৫৭:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
বর্তমান যুগকে তথ্যের যুগ বলা হয়। প্রতিদিন সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে লাখো খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এই বিশাল তথ্যপ্রবাহের কেন্দ্রবিন্দু হলো সাংবাদিকতা।

কিন্তু প্রশ্ন আসে, ইসলামি দৃষ্টিতে সাংবাদিকতা কি হালাল, না কি হারাম? ইসলামের মৌলিক শিক্ষা হলো সত্য কথা বলা, ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সাংবাদিকতা কেবল হালালই নয়, বরং সমাজের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপূর্ণ পেশা।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে সূরা আন-নিসা: ১৩৫ নম্বর আয়াতে বলেন, “তোমরা সত্য কথা বলো, ন্যায়বিচারের সাক্ষী হও।”
অতএব, সাংবাদিকতা তখনই হালাল ও কল্যাণকর, যখন তা সত্য প্রচার, ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং মানুষের মঙ্গল কামনায় পরিচালিত হয়। একজন সৎ সাংবাদিক সমাজে আলোর দিশা দেখাতে পারেন। তিনি অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলম ধরেন, নিপীড়িতের পক্ষে কথা বলেন, নীরবতার দেয়াল ভেঙে সত্য প্রকাশ করেন। এমন সাংবাদিকতা ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রেই সাংবাদিকতা আজ ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা, রাজনৈতিক পক্ষপাত কিংবা ব্যক্তিগত স্বার্থের উপকরণে পরিণত হয়েছে। যাচাইবাছাই ছাড়া সংবাদ প্রকাশ, অপপ্রচার, চরিত্রহনন কিংবা অশ্লীলতা ছড়ানো ইসলামের চোখে কঠোরভাবে নিন্দিত।
সূরা আল-হুজরাত: ৬ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “যদি কোনো ফাসেক ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে তা যাচাই করো।”
অতএব, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করা যেমন নৈতিকভাবে ভুল, তেমনি ইসলামি দৃষ্টিতে হারাম। সাংবাদিকের কলম কখনো যেন মানুষের সম্মানহানির অস্ত্র না হয়। বরং তা ন্যায় ও সত্যের রক্ষাকবচ হোক।
সাংবাদিকতা একটি আমানত। এই আমানত রক্ষা করার দায়িত্ব সাংবাদিকের ওপর। সত্য, নিরপেক্ষতা, দায়িত্ববোধ এবং আল্লাহভীতি, এই চারটি গুণ যদি সাংবাদিকতার ভিত্তি হয়, তবে এই পেশা কেবল হালাল নয়, বরং সমাজ সংস্কারের অন্যতম মহান ইবাদত হতে পারে।
সাংবাদিকতা হারাম নয়, কিন্তু তার ব্যবহারের ভুলই তাকে হারামের পথে নিয়ে যায়। সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকা সাংবাদিকতা ইসলামের দৃষ্টিতে সম্মানজনক ও সওয়াবের কাজ। তাই সাংবাদিকদের উচিত, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মানবকল্যাণকে লক্ষ্য রেখে কলম চালানো।
লেখকঃ
মারুফ হোসেন
প্রকাশক ও সম্পাদক
দৈনিক আজকের তালাশ