প্রতিনিধি ২৬ জুলাই ২০২৫ , ৭:০৬:০০ প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইজুল ইসলাম:
বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড চরআবদানি গ্রাম যেন এখন এক জলাবদ্ধ দ্বীপ। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে এই গ্রাম পরিণত হয় জলাবদ্ধ এলাকায়। যার প্রভাবে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বৃষ্টি থেমে গেলেও পানি নামার কোনো পথ নেই। নালার অভাবে রাস্তাঘাট, দোকানপাট, এমনকি ঘরবাড়ির ভেতরেও পানি জমে থাকে দিনের পর দিন। ফলে শিশু, বৃদ্ধ ও নারীসহ সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিশাল ভোগান্তিতে।

স্থানীয় কৃষক আবদুল করিম বলেন, “বছরের পর বছর ধরে আমরা এই সমস্যার ভেতরেই বেচে আছি। ঘরের ভেতরে পানি ঢুকে গেছে, রান্নাঘর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। রোগ-ব্যাধিও বাড়ছে, কিন্তু দেখার কেউ নেই, দুর্ভোগই যেন আমাদের নিয়তি।”
চরআবদানীর এক শিক্ষক জানান, বৃষ্টির পরপরই হাঁটুসমান পানি জমে থাকে। এতে ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসতে চায় না। পানির মধ্যে ডুবে থাকা নোংরা পরিবেশে মশার উৎপাত বেড়ে গেছে। কলেরা, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। অথচ এলাকায় কোনো অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প কিংবা স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা নেই।
স্থানীয় এক স্বাস্থ্য সহকারী জানান, “শিশু ও বৃদ্ধরা সর্দি, কাশি, জ্বর, পেটের পীড়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসার অভাবে রোগ আরও জটিল হয়ে উঠছে।” স্থানীয়দের দাবি, চরআবদানীর বাসিন্দারা বারবার নির্বাচনে অংশ নিলেও উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত করছেন তারাই। রাস্তা, ড্রেন, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সবকিছুতেই চরম অবহেলা। উন্নয়নের কোন পরিকল্পনাই নেই।
একজন বয়োজ্যেষ্ঠ বলেন, “নির্বাচনের সময় নেতারা আসে, প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু ভোটের পরে কেউ আর ফিরে তাকায় না।”
এলাকাবাসী বলছে, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ে একাধিকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে অভিযোগ জানানো হলেও, আজও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতি আজও হয়নি ড্রেনেজ ব্যবস্থা।
৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “পানি নামার জন্য একটা ড্রেন দরকার। সরকার যদি একটা প্রকল্প হাতে নেয়, তাহলে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।”
চরআবদানি গ্রামের জলাবদ্ধতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ে একটি জরুরি তদন্ত এবং বরাদ্দ দিয়ে ড্রেনেজ উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। অন্যথায় ভবিষ্যতে ভয়াবহ স্বাস্থ্য বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সচেতন নাগরিকরা।











