বরিশাল

বরিশালে প্রশাসনের নীরবতায় স্বাস্থ্যঝুঁকি!

  প্রতিনিধি ৬ আগস্ট ২০২৫ , ৫:৫১:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ

তালাশ প্রতিবেদক:
বরিশাল নগরীর দপ্তরখানার পুরান কয়লাঘাট এলাকার মাতুব্বর কলনিতে অবস্থিত দুলাল কেমিক্যাল ওয়ার্কস নামক একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লাইসেন্সবিহীন ও অনুমোদনহীনভাবে নকল তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনের অভিযোগ উঠেছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র ও সরেজমিন তদন্তে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি সরকারি কোনো অনুমোদন ছাড়াই ‘নিউ ঢাকা জর্দ্দা’ ও ‘বরিশাল জর্দ্দা’ নামক দুটি তামাকজাত পণ্য উৎপাদন করছে। এসব পণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে তামাক পাতা, পারফিউম, খাবার রং, পিপারমেন্ট, গ্লিসারিন, গ্লুকোজ ও লিকুইড প্যারাসিন যা একটি ড্রাগজাতীয় উপাদান হিসেবে পরিচিত। উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নেই কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি, সুরক্ষা কিংবা পরিবেশগত মান। সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এসব পণ্য তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

 

বিশেষ করে “বরিশাল জর্দ্দা” পণ্যটির বিএসটিআই অনুমোদন, পরিবেশ ছাড়পত্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেই বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. দুলাল দাবি করেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স, কাস্টমস লাইসেন্স এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের একটি অনুমোদন রয়েছে। তবে “নিউ ঢাকা জর্দ্দা” পণ্যটির কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র তিনি দেখাতে পারেননি। দুলাল বলেন, “কয়েক বছর আগে নকল পণ্য কিনে এনে বিক্রির কারণে আমাকে জরিমানা করা হয়েছিল। সেই জরিমানায় আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।”

 

তবে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, তামাকজাত পণ্য উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদন ও লাইসেন্স বাধ্যতামূলক, যার মধ্যে রয়েছে- ট্রেড লাইসেন্স, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (TIN), ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সনদ, বিএসটিআই অনুমোদন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সতর্কবার্তা অনুমোদন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ফ্যাক্টরি লাইসেন্স ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী নিবন্ধন।

 

এইসব লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন করলে “ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩)” অনুযায়ী সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড বা ২ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব পণ্য এলাকার ছোট দোকানগুলোতে সহজলভ্য এবং কিশোর-তরুণদের মধ্যে ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। এ বিষয়ে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও কঠোর নজরদারি কামনা করেছেন তারা।

আরও খবর

Sponsered content