অপরাধ

প্রশাসনের নীরবতায় গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ায় হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক!

  প্রতিনিধি ২৯ মার্চ ২০২৫ , ৭:১২:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

0Shares

গৌরনদী প্রতিবেদকঃ

মাদকের আমদানি, ক্রয়—বিক্রয় ও সেবনের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে বরিশালের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরসহ প্রত্যন্ত অঞ্চল। হাত বাড়ালেই মেলছে মরণ নেশা হেরোইন, ইয়াবা, ফেন্সিডিল। গাঁজার তো কথাই নেই !

 

গোয়েন্দা বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, বেনাপোল— খুলনা থেকে যশোর হয়ে গোপালগঞ্জের মধ্য দিয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট মহাসড়ক ধরে গৌরনদী হয়ে মাদকের চালান পৌঁছে যায় বরিশাল বিভাগীয় শহরসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে। এই রুটের নিরাপদ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করে পয়সারহাট ও এর আশপাশ এলাকাকে। পুলিশ প্রশাসন মাঝে মধ্যে দুথএকজন গাঁজা বিক্রেতা ও সেবনকারীকে গ্রেপ্তার করলেও মুল হোতাদের গ্রেপ্তারে তৎপর না হওয়ায় কোন ভাবেই মাদক সেবিদের অদম্য উন্মাদনা রোধ করা যাচ্ছে না বলে উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন শৃঙ্খলা সভায় কর্মকর্তা, সাংবাদিকরা, জন প্রতিনিধি ও সুধী সজ্জনেরা অভিযোগ করে আসছেন।

 

অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন চরম উদ্বিগ্ন ধ্বংস হচ্ছে যুবসমাজ। পুলিশ বলছে আইনি দুর্বলতার জন্যই বেশী দিন তাদের আটক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ঈদকে সামনে রেখে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা । ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাঝে মধ্যে খুচরা মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের সাজা প্রদান করলেও মাদক ব্যবসায়ীরা এতটুকু দমেনি। জেলা পুলিশ বিশেষ শাখার সর্বশেষ তালিকানুয়ায়ি, উপজেলায় পাইকারি গাঁজা, ফেন্সিডিল ও ইয়াবা বিক্রেতার সংখ্যা ৩৯জন। এদের মধ্যে আওয়ামীলীসহ বিভিন্ন দলেরও লোকজনের নাম রয়েছে। ২০২৪ সালে ওই তালিকায় বিক্রেতার সংখ্যা দাড়িয়েছে ২৪ জনে।

 

এলাকায় নৌ—ডাকাত, রোড ডাকাত, ট্রান্সফরমার চোরের তালিকায় নাম রয়েছে ২০ জনের। তালিকাভুক্ত ২০ জনের সকলের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের তালিকায় রয়েছে ৩১ জন। তবে গোয়েন্দা তালিকাভুক্ত কাউকেই পুলিশ সাঁড়াশি অভিযানের মধ্যে গ্রেপ্তার করেনি। সম্প্রতি দেশব্যাপী অভিযানে আগৈলঝাড়ায় পুলিশের তালিকাভুক্ত উল্লেখযোগ্য কোন সন্ত্রাসী, মাদক বিক্রেতা, চাঁদাবাজ গ্রেপ্তার না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভেরও কমতি নেই। বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল আগৈলঝাড়া পুলিশের নিষ্ফল অভিযান।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, উপজেলায় প্রার্থী ইউনিয়নের কটকস্টল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমানের ওরফে (ইঙ্গুল মাঝির) পুত্র দক্ষিণ অঞ্চলের মাদক সম্রাট হীরা মাঝির নিয়ন্ত্রণে গ্রামের মাদক বিক্রি ও সেবনের কয়েকটি চিহ্নিত স্পট হচ্ছে— টরকী বাসস্ট্যান্ডে ঈগল কাউন্টারের ফরিদ সরদার,ও ফরহাদ সরদার বাসস্ট্যান্ডে সংলগ্ন এলাকা,পুরো মাদকের স্পট চালিয়ে যাচ্ছেন।
এবং টরকী বাসস্ট্যান্ডে তার আরেক সহযোগী শাওন দেওয়ান,অনিম সরদার, সোহেলসহ টরকী ফরহাদ মুন্সীর চাতাল এ ইয়াবা, ফেন্সিডিল,গাজার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কোনরকম প্রশাসনের বাধা ছাড়াই।

 

এছাড়া কটকস্টল সাউদেরখাল এলাকার মাজার গেট সংলগ্ন চান খান ইয়াবা ও ফেন্সিডিল এর ব্যবসা পরিচালনা করেন।

 

হেলিপ্যাড, কালি খোলা, পয়সারহাটের পূর্ব ও পশ্চিমপাড়ের ভ্যানস্ট্যান্ড, বাগধা, পাকুরিতা স্কুল এলাকা, জোবারপাড়—নাঘিরপাড়ের ব্রিজ ও স্কুল এলাকা, বড়মগরার উত্তরপাড়, আস্করের বাঁশতলা, চক্রিবাড়ি, কান্দিরপাড়, ছয়গ্রাম বন্দর, মিশ্রিপাড়া হাট, কালুরপাড়, সাহেবেরহাট, মাগুরা বাজার, ভালুকশি, রাজিহার, বাশাইল, পূর্ব সুজনকাঠী

 

রামেরবাজার, রামানন্দেরঅঁাকসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত মাদক বিক্রি ও সেবন চলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, টেকেরহাটে পুলিশ চেকপোস্ট বসার কারণে মাদক পাচারকারীরা আগৈলঝাড়ার আশেপাশে কোন পুলিশি চেকপোস্ট না থাকায় পয়সারহাট এলাকাকে অধিক নিরাপদ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করছে।

 

এ রুটের ব্যবসায়ীরা টরকী খেয়া ঘাট দিয়ে মাদকের বড় চালান পার করছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও রামসিল থেকে রাজিহার হয়ে চাঁদশী হয়ে গৌরনদী ও রাজিহার থেকে ঘোষেরহাট রুট ব্যবহার করছে। ঘোষেরহাট ঠাকুর বাড়ি মাদকের অন্যতম একটি বড় বিক্রয় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। ওই এলাকার বিক্রেতারা বাশাইল ওয়াপদা এলাকায় ভ্রাম্যমাণ মাদক বিক্রির স্পট গড়ে তুলেছে হীরা মাঝির নেতৃত্বে ।

 

এব্যাপারে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইউনুস হোসেন জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। মাদকের ব্যাপারে আমারা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।

প্রতিদিনই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে। ঈদ উপলক্ষ্যে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা হবে।

0Shares

আরও খবর

Sponsered content