বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার ওসি (অপারেশন) গাজী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে রিপন রানা নামের এক সংবাদকর্মীকে মারধর করে থানা গারদে আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি রোজাদার সেই সংবাদকর্মীকে রোজা খোলার সুযোগও দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রিপন রানার। এ সময় তার সাথে থাকা মোবাইল, ক্যামেরা ও বুম ছিনিয়ে নিয়ে সকল ডকুমেন্ট ডিলিট করে দেয়া হয়।
শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেল পৌণে ৬ টার দিকে কোতয়ালী মডেল থানায় এ ঘটনার জন্ম দেন ওসি (অপারেশন) গাজী মিজানুর রহমান।
রিপন রানা বরিশাল টিভি ও বরিশাল টাইমস অনলাইন পোর্টালের রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
রিপন রানার অভিযোগ- বরিশালের কনটেন্ট ক্রিয়েটর পাবেল মুন্সির সাথে সাংবাদিকদের বাগবিতন্ডা চলছে এমন খবর পেয়ে থানায় ছুটে যান রিপন। থানায় গিয়ে কনটেন্ট ক্রিয়েটর পাবেল মুন্সির সাথে দেখা হলে রিপন তার সাথে কথা বলে জানতে চান আজ কি ঘটনা ঘটেছিল। এ সময় এসআই জুবায়ের এসে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে কটুক্তিমূলক কথা বলতে থাকে। তখন রিপন এর প্রতিবাদ করলে তাৎক্ষনিক ওসি (অপারেশন) গাজী মিজানুর রহমান ছুটে এসে তিনিও সাংবাদিকদের নিয়ে কটুক্তি করেন। পরিস্থিতি বেসামাল দেখে তাৎক্ষনিক রিপন পুলিশ কমিশনারকে কল দিয়ে বিষয়টি জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে ওসি গাজী মিজানসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ রিপনকে বেধরক মারধর শুরু করেন। মারতে মারতে একপর্যায় তাকে থানা গারদে আটকে রাখেন। থানা গারদে আটকে পুনরায় মারধর করে তার সাথে থাকা মোবাইল, ক্যামেরা ও বুম ছিনিয়ে নিয়ে সকল ডকুমেন্ট ডিলিট করে দেয় বলে অভিযোগ রিপনের। থানা গারদে বসে রিপন রোজা খোলার জন্য পানি চাইলে তাকে পানি না দিয়ে ওসি গাজী মিজান বলতে থাকেন- ওকে কেউ পানি দিবিনা।
রিপন আরো বলেন- এই পুরো ঘটনাটি কোতয়ালী মডেল থানার সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড রয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজটি বিশ্লেষন করলে পুরো ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে।
এদিকে রিপনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সত্যতা যাছাই করে পুলিশ কমিশনারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। পাশাপাশি তার সাথে ঘটা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
এদিকে খবর পেয়ে রাত পৌণে ৮ টার দিকে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক থানায় গেলে তাদের সাথেও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওসি গাজী মিজান। পরে রিপনকে অহেতুক পুলিশি হয়রানি থেকে বাঁচাতে ভুল স্বীকার করে তাকে ছাড়িয়ে আনা হয়।
গারদে থাকা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অন্তর নামের এক কিশোর বলেন- অহেতুক পুলিশ সাংবাদিক রিপন ভাইকে মারধর করে। এখানে সাংবাদিক রিপন ভাইর কোন ভুল আমার চোখে পরেনি, অযথাই পুলিশ তাকে মারধর করেছে।
এ বিষয়ে ওসি (অপারেশন) গাজী মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বলেন- অনুমতি না নিয়ে রিপন তার ভিডিও ধারণ করে, এর বাহিরে তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসিকে কল দিলে এসআই উজ্জল কলটি রিসিভ করে বলেন- ওসি স্যার নামাজে গেছেন।
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন- বিষয়টি আমি শুনেছি। ভুক্তভোগী সাংবাদিককে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।