গণমাধ্যম

সাংবাদিকতা যখন প্রাণঘাতী

  প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২৫ , ৯:৩৫:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

আসাদুজ্জামান তুহিন, বয়স মাত্র ৩৮। একজন সাংবাদিক, একজন বাবা, একজন সত্য খোঁজার মানুষ। কিন্তু একটি ফেসবুক লাইভের কারণে, একটি চায়ের কাপের সময়, তাকে গাজীপুরের জনবহুল চৌরাস্তার পাশে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হলো। কী ভয়াবহ বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আছি আমরা!

 

তুহিন একটি লাইভ করেছিলেন সাধারণ মানুষ যাকে বলে ‘চাঁদাবাজি’র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। রাস্তা পারাপারের বিশৃঙ্খলা এবং ফুটপাত দখলের চিত্র তুলে ধরেছিলেন। এই কাজটি ছিল সমাজের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিক দায়িত্ব পালন। অথচ এর ফলাফল হলো প্রাণ হারানো!

 

সাংবাদিক হত্যা নতুন কিছু নয়। তবে দিনের আলোয় জনসমক্ষে এভাবে কাউকে গলা কেটে হত্যা করার সাহস যে কারও হতে পারে, তার মানে আমাদের বিচারব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা ও মানবাধিকারের অবস্থা ভয়ানক প্রশ্নের মুখে।

 

এই হত্যাকাণ্ড শুধু একজন সাংবাদিককে হত্যা নয় এটি বাকস্বাধীনতাকে হত্যা, এটি সত্য প্রকাশকে দমন, এটি জনগণের চোখ-কান বন্ধ করে দেওয়ার চক্রান্ত। আজ তুহিন, কাল হয়তো অন্য কেউ। যদি এখনই প্রতিবাদ না হয়, প্রতিরোধ না গড়ে তোলা হয় তবে এই অন্ধকার আমাদের গ্রাস করে ফেলবে।

 

প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের রাষ্ট্র কী করবে? অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে কি? নাকি আবারও বিচারহীনতার দীর্ঘ তালিকায় আরেকটি নাম যোগ হবে?

 

এখন সময় এসেছে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার। সময় এসেছে, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আর কাউকে যেন জীবন দিতে না হয়, সেই পরিবেশ গড়ে তোলার।

 

তুহিনের রক্ত যেন বৃথা না যায় এটিই হোক আমাদের সামাজিক ও পেশাগত শপথ।

লেখক:

মোঃ মারুফ হোসেন

প্রকাশক ও সম্পাদক

দৈনিক আজকের তালাশ 

আরও খবর

Sponsered content